বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ ৬ (এনিমে,মুভি,টিভি সিরিজের আসক্তি দূরীকরণ)

প্রথমেই বলে নেই, এনিমে,মুভি & টিভি সিরিজ দেখা থেকে কেন আমাদের বিরত থাকতে হবে।

এসব দেখা বন্ধ করার অন্যতম কারণ হলোঃ

১. একজন মুসলিম হিসেবে এই বিনোদন গুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইসলামের সীমার বাইরে চলে যায়। তাছাড়া

২. এক-একটা এনিমে & টিভি সিরিজ গুলো হয় কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকশো ঘন্টা। এভাবে সামান্য বিনোদনের জন্য নিজের জীবনের এত গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলো নষ্ট করা কখনোই একজন প্রোডাক্টিব মানুষের কাজ হতে পারে না।আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো 

৩. এগুলো কখনোই আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। বরং দিন দিন আপনাকে ডোপামিন রেসিস্টেন্স করে তুলবে। এসম্পর্কে সামনে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।

বর্তমান সময়ের অন্যতম ভয়াবহ একটি আসক্তি হচ্ছে মুভি & টিভি সিরিজের আসক্তি। টিভি শো দেখা প্রথমে আনন্দদায়ক এবং তারপরে মানসিক ওভারলোডের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত করে ফেলে।

বর্তমানে বিভিন্ন সিনেমাহলের পাশাপাশি বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া নানা ওয়েব সিরিজের প্রতি আকর্ষণ এখন আট থেকে আশি, যা প্রায় সকলের মধ্যেই চোখে পড়ে। অথচ এই আসক্তির ফলে যেমন ঘটছে স্বাস্থ্যহানি, তেমনই মানসিক দিক থেকে তৈরি হচ্ছে একাধিক জটিলতা।

এনিমে,মুভি,টিভি সিরিজের আসক্তিঃ

টিভি সিরিজ আসক্তি বা ব্যাধিকে মেডিক্যালে বিঞ্জ ওয়াচিং দ্বারা প্রকাশ করা হয়। Binge-watching সম্পর্কে এই পোস্টে বেশি কিছু বলব না, এতে পোস্ট বেশি বড় হয়ে যাবে। তবে এককথায় বিঞ্জ ওয়াচিং হলো একজায়গায় বসে,শুয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে বিনোদন মূলক প্রোগ্রাম উপভোগ করা। 

Binge-watching সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেঃ 
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Binge-watching

ওয়েব সিরিজের ক্ষতিকর দিকঃ

১. ওয়েব সিরিজ দেখার নেশায় কমেছে ঘুমের সময়ঃ
ওয়েব সিরিজে আসক্ত হওয়ার কারণে রাত জেগে সিরিজ দেখে সম্পূর্ণ করার প্রবনতা তৈরি হয়। ফলে অনিয়ন্ত্রিত ঘুমের কারণে Insomnia সহ আরো নানান সমস্যা দেখা দেয়।

২. অস্বাভাবিক জীবন যাপনঃ
এই বিনোদন অতিরিক্ত উপভোগের কারণে & অতিমাত্রায় ঘরবন্দি থাকতে থাকতে আমাদের দৈনন্দিন রুটিন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে & আমরা আরো বেশি অলস হয়ে যাচ্ছি। ফলে আমাদের জীবন যাপনে বিরাট নেগেটিভ পরিবর্তন দেখা দেয়।

৩. মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিঃ 
অতিরিক্ত সিরিজ আসক্তির কারণে অনেকের বিভিন্ন মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। সবার থেকে দূরে থাকতে চায় & এটা একটা রুমে নিজেকে আবদ্ধ রাখতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।

৪. শারীরিক স্বাস্থ্যের অবনতিঃ 
রাত জাগার কারণে চোখে অস্বস্তি, কাজের প্রতি অনীহা, ওজন বেড়ে যাওয়া & এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে, শুয়ে থাকার কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। 

৪. সময়ের বরকত চলে যায়ঃ
লাগাতার একটার পর একটা পর্ব দেখতে দেখতে সারা রাত কোথা দিয়ে কেটে যায়, টেরই পাওয়া যায় না। সময়ের বরকত লাভের উপায় সম্পর্কে জানতেঃ
http://bit.ly/somoye-borkot

৫. জীবনের মূল উদ্দেশ্যকে ভুলিয়ে রাখাঃ
অতিরিক্ত সিরিজ আসক্তির কারণে আমাদের এই পৃথিবীতে আগমনের মূল উদ্দেশ্যকেই ভুলিয়ে রাখে। মুভি & টিভি সিরিজের প্রতি অতিরিক্ত সময় দেয়ার কারণে আল্লাহর হুকুম নামাজ সহ অন্যান্য বিধান প্রতি অবহেলা করা হয়।

৬. মুভি & টিভি সিরিজের চরিত্রগুলির প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসাঃ 
এতে অনেক সময় কাফের/অমুসলিমদের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। ফলে অনেকেই রিয়েল লাইফে সেই মুভি & টিভি সিরিজের চরিত্রগুলিকে অনুসরণ করা শুরু করে। আর
রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে’ ।
(আবুদাঊদ হা/৪০৩১; মিশকাত হা/৪৩৪৭)

৭. খারাপ বিষয়ের শিক্ষা নেয়াঃ 
সিরিয়াল থেকে বউ ও শাশুড়ির ঝগরা, সিরিয়াল কিলিং মুভি দেখে সিরিয়াল কিলার, ব্যাংক ডাকাতি মুভি-সিরিজ থেকে ডাকাতি ইত্যাদি। 

৮. LGBTQ & ফ্রি মিক্সিং কে প্রমোট করা হয়ঃ
একটা সময় LGBTQ & ফ্রি মিক্সিং এর বিষয় গুলো নরমালাইজ ছিল না। কিন্তু টিভি সিরিজ গুলোতে এইগুলোকে সাধারণ বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের প্রায় জোর করেই এগুলো দেখানো হয়। ফলে এগুলো এখন আমাদের কাছে খুব নর্মাল মনে হয়।

৮. প্রচুর অশ্লীলতা থাকেঃ
বর্তমান মুভি & টিভি সিরিজ অপ্রয়োজনে বিভিন্ন অশ্লীল দৃশ্য দেখানো হয়। যা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা তো দূরে থাক, একাও দেখা সম্ভব না। আর এই অশ্লীল দৃশ্যগুলো আমাদের পর্নোগ্রাফি ট্রিগার হিসেবে কাজ করে। ফলে আমরা হারিয়ে যাই পর্নোগ্রাফির নীল দুনিয়ায়।

১০. আমরা জানতে চাই কিভাবে এটি শেষ হয়ঃ 
এতে অনেক গুলো সিজন থাকে & এতে বছর বছর নতুন নতুন সিজন এড হয়। যার শেষ দেখতে গিয়ে আমাদের প্রচুর সময় নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে game of thrones এর উদাহরণ দেয়া যাক। এই টিভি সিরিজের ইতোমধ্যে ৮টা সিজন, ৭৩টা এপিসোড রিলিজ হয়েছে। যার টোটাল রান টাইম ৭০ ঘন্টা ১৪ মিনিট। শুধু ১টা সিরিজের পেছনেই কতো সময় নষ্ট হয় চিন্তা করুন।

১১. সম্পূর্ণ সিরিজ একসাথে দেখার প্রবনতাঃ 
একসাথে সম্পূর্ণ সিরিজ দেখার প্রবনতার জন্য অনেক সময় এমন হয় যে, অনেকে এক বসায় 10-20 ঘন্টা কাটিয়ে দেয়। এতে ঘুম & স্বাভাবিক জীবনের কর্মকান্ডে ব্যাঘাত ঘটে। 

নেটফ্লিক্সের একটি জরিপে দেখা গেছে যে 61% ব্যবহারকারী নিয়মিতভাবে একটি শোয়ের 2 থেকে 6টি পর্ব দেখেন, যখন অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে। Netflix ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই আনন্দদায়ক বিষয়ক সিরিজ গুলো দেখার পরিবর্তে,‌ উদাসীন/বেদনা দায়ক বিষয়ক সিরিজের পর্বগুলি দেখতে পছন্দ করে। ফলে এর প্রভাব তাদের দৈনন্দিন জীবনে পড়ে। গড়ে, লোকেরা একটি শোয়ের একটি সিজন দেখা শেষ করে।

তথ্য অনুযায়ী, স্ট্রেঞ্জার থিংস সিজন 2-এর প্রথম দিনেই 361,000 মানুষ সবকটি নয়টি পর্ব দেখেছে। 
(আমি যখন দেখি তখন ১&২য় সিজন ২টাই টানা দেখে ফেলেছিলাম)😑

এই সমীক্ষা থেকে নিশ্চই এর ভয়াবহতা‌ সম্পর্কে ধারণা করতে পারছেন।

১২. টানা টিভি সিরিজ দেখার নেতিবাচক প্রভাবঃ 
যদি আপনি কেবলমাত্র তিনটি পর্ব দেখতে চান তবে আপনি আপনার অজান্তেই এক সময়ে ছয়টি বা তার বেশি পর্ব দেখে ফেলবেন। সময়ের সাথে সাথে, এটি আপনাকে অলস করে তুলতে পারে।

আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশনের জার্নাল প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, যে প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে টিভি সিরিজ দেখে, তাদের অকাল মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ, খুব দীর্ঘ বসে বসে ডায়াবেটিস, রোগ, হৃদরোগ এবং ক্যান্সার সহ বিভিন্ন রোগের সূত্রপাত হতে পারে।

এছাড়া আরো অনেক ক্ষতি রয়েছে যা একজন মুভি, সিরিজ আসক্ত ব্যক্তিই উপলব্ধি করতে পারে।

এনিমে,মুভি,টিভি সিরিজের আসক্তি কমিয়ে আনার কিছু টিপসঃ

১. দৈনিক নির্দিষ্ট সময় & পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানঃ
চিকিৎসকরা বলছেন টেলিভিশনে বা কম্পিউটারে একটার পর একটা পর্ব দেখতে দেখতে ঘুম কম হলে শরীরে যে ধরনের অস্বস্তির সৃষ্টি হয়, তার ফলে সারা এরক্ষণই জমে থাকবে চরম ক্লান্তি। কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুমোলে যে কোনও আসক্তির মাত্রাই হবে কম।

২. সময় নির্দিষ্ট করে নিনঃ
সারা দিনে এই টেলিভিশন & টিভি সিরিজের পেছনে কতটা সময় দেবেন, তা আগে থেকে ঠিক করে রাখুন। সে ক্ষেত্রে কাজে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা কিছুটা কমে। আর কিছুদিন পরপর এই সময়ের পরিমান কমিয়ে আনুন। নিয়ম মেনে এই রুটিন অনুসরণ করলে আসক্তি ক্রমশ উধাও হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

৩. ভার্চুয়াল জগৎকে নয় ফিজিকাল জগৎকে উপভোগ করুনঃ
ঘুরে আসুন ইন্টারনেট বিহীন কোনও অঞ্চলে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে নিজের জন্য রাখুন কিছু অবসর সময়। ধারাবাহিক বা ওয়েব সিরিজের পর্ব পরপর দেখতে থাকার অভ্যাসে বদল ঘটলে এই আসক্তির আধিক্য কমবে অনেকটাই।

৪. নিয়মিত শরীর চর্চা/ব্যায়াম করুন & পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুনঃ
শরীরচর্চা এবং সুষম খাদ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন এই সময়ে। নিয়মিত শারীরিক কসরত আর খাবারে তেল-মশলা কমালে শরীর থাকবে তরতাজা। বিচারবুদ্ধির স্বচ্ছতা কোনও আসক্তিকে আর কাছেই ঘেঁষতে দেবে না।

৫. টিভি সিরিজ দেখার সময় গুলো ভালো অভ্যাস দ্বারা‌ রিপ্লেস করুনঃ
যেমনঃ বই পড়া, ইসলামিক লেকচার সিরিজ শোনা, ভালো ভালো শিক্ষা মূলক ডকুমেন্টারি সিরিজ দেখা।

বাচ্চাদের কার্টুন দেখার ক্ষেত্রে সতর্কতাঃ

শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে নয়, টিভি দেখার অভ্যাস শিশুদের জন্যও ভালো নয়। ২০১৫ সালের একটি গবেষণায়, কিন্ডারগার্টেন যে শিশুরা প্রতিদিন এক থেকে দুই ঘন্টা টিভি দেখার জন্য অভ্যস্ত থাকে, তাদের ওজন বেশি হওয়ার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ঝুঁকি থাকে। এছাড়া টিভি সিরিজ বা কার্টুন সিরিজ আমাদের সন্তানের চোখের অনেক ক্ষতি করে।

এজন্য বাচ্চাদের চেষ্টা করবেন কার্টুনের প্রতি আসক্তি তৈরি না করে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করতে। আর ছোট বাচ্চা হলো মাটির পুতুলের মত, তাদের ছোট বেলা থেকে যেভাবে গড়ে তুলবেন সেভাবেই গড়ে উঠবে। তাই তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ খেয়াল রাখবেন।

যদি ঠিক করতে না পারেন আপনার সন্তানের জন্য কোন বই সিলেক্ট করবেন তাহলে নিচের পোস্টটি দেখতে পারেন।

ছোটদের জন্য ইসলামিক বইঃ
http://bit.ly/sotoder_islamic_book

আর যদি ছোট বাচ্চাদের কার্টুন দেখা একেবারেই বন্ধ করতে না পারেন। তাহলে তাদের এমন কার্টুন দেখতে দিন যা তাদের মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে। প্রয়োজনে নিজের পোস্টটি দেখতে পারেন।

মুসলিম শিশুদের জন্য কিছু ইউটিউব চ্যানেলঃ
http://bit.ly/youtube_channel_for_muslim_kids

এনিমে,মুভি,টিভি সিরিজের আসক্তির সমাধানঃ

এই আসক্তির ২টি সমাধান আমি দিব।

১. উত্তম সমাধানঃ 

এটা তাদের জন্য যাদের নেশা এখনও এতোটা সিরিয়াস হয় নাই তাদের জন্য। আমাদের সরাসরি এইসব দেখা বন্ধ করে দিতে হবে। এগুলোর পরিবর্তে ইসলামিক লেকচার সিরিজ & বাছাইকৃত ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও দেখতে হবে। 

বাছাইকৃত ইসলামিক ইউটিউব চ্যানেলের লিংকঃ
https://m.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1056798394723291/?mibextid=Nif5oz

প্রোডাক্টিভ & স্কিল ডেবলপমেন্ট কোর্সঃ
গুগলে সার্চ করলে অনেক কোর্স পেয়ে যাবেন।

ইসলামিক অনলাইন কোর্সঃ
https://m.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/981806375555827/?mibextid=Nif5oz

ইসলামিক লেকচার সিরিজের কালেকশনঃ
https://m.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1258588077877654/?mibextid=Nif5oz

ইসলামিক অডিওবুক কালেকশনঃ
https://m.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1329521140784347/?mibextid=Nif5oz

বাছাইকৃত মুভি,ডকুমেন্টারি ও টিভি সিরিজঃ
এই বিষয়টা নিয়ে আমার কাজ করার ইচ্ছা ছিল। যেখানে আমরা আমাদের বাছাইকৃত মুভি,ডকুমেন্টারি & টিভি সিরিজ গুলো রিভিও এবং ডাউনলোড লিংক সহ শেয়ার করব। এজন্য একটা ফেসবুক গ্রুপও খুলেছিলাম। কিন্তু এতগুলো গ্রুপ কন্ট্রোল আমার একার পক্ষে সম্ভব না। তবে কেউ যদি আমাকে সাহায্য করতে আগ্রহী হোন তাহলে নিচের গ্রুপে জয়েন হয়ে আমাকে ইনবক্স করলেই হবে।

গ্রুপ লিংকঃ
https://www.facebook.com/groups/1163392250939668/?ref=share_group_link


২. অনুত্তম সমাধানঃ

এটা তাদের জন্য যাদের নেশা অনেক সিরিয়াস অবস্থায় পৌছে গেছে তাদের জন্য। তবে এক্ষেত্রে আমাদের বুঝতে হবে এটা কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সমাধান নয়। এজন্যেই একে অনুত্তম সমাধান নাম দিয়েছি। এটা আপনার এই অতিরিক্ত আসক্তিকে কন্ট্রোলের জন্য। আর অবশ্যই এখানে শেয়ার করা বিনোদন গুলো যারা উত্তম সমাধান ফলো করছেন তারা ভুলেও ক্লিক করবেন না। কারণ এখানে শেয়ার করা বিনোদন গুলো সুস্থ বিনোদন হলেও এখানে অনেক হারাম বিষয় রয়েছে। আর আলেমরা এ গুলো থেকে বেঁচে থাকার উপদেশ দেন। এক্ষেত্রে দায়িত্বের সাথে & নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বাছাইকৃত সুস্থ বিনোদন দেখতে হবে। যেমনঃ দিনে ১ ঘন্টা বা প্রতি শুক্রবার ৩ ঘন্টা। এভাবে আস্তে আস্তে সময় কমিয়ে আনতে হবে। এবং এভাবে নিজদেরকে উত্তম সমাধানের দিকে ফিরিয়ে নিতে হবে।

বাছাইকৃত সুস্থ বিনোদনঃ
https://towfiqulwritting.notion.site/f1d0c56806934abe9818fb245979a0b3

মুভি & টিভি সিরিজ explanation: 
এজন্য ইউটিউবে অনেক চ্যানেল পেয়ে যাবেন।
যেমনঃ
বাংলার জন্যঃ cineseries central, rupali pordar golpo
ইংরেজির জন্যঃ movie recaps, mystery recapped 

প্রো টিপসঃ

কিছুদিন আগে আমিও এই আসক্তিতে আক্রান্ত ছিলাম । এমন কোনো এনিমে, সিরিজ, ইংরেজি, হিন্দি, তামিল মুভি, সিরিজ, বাংলা নাটক কোনো কিছুই বাকি রাখি নি। করোনার অবসরের সময় এই আসক্তি তৈরি হয়েছিল আমার। 

আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন। কারণ আমি এখন লেখালেখি & বই পড়ার পিছনে সময় দেয়ার কারণে ঐগুলো দেখার সময়ই পাই না। আর একজন প্রোডাক্টিভ পারসন হিসেবে ঐগুলো আমার কাছে অনেক আনপ্রোডাক্টিভ কাজ মনে হয়। 

তাই আপনারাও চেষ্টা করবেন নিজেকে কোনো কাজে ব্যস্ত রাখতে। হতে পারে সেটাতে আপনি অত দক্ষ নন। কিন্তু চেষ্টা করতে সমস্যা কোথায়! যেমনঃ আপনি লেখতে পছন্দ করলে লিখতে থাকবেন। যা ইচ্ছা হয় লিখে ফেসবুকে & ব্লগে পোস্ট করে দিবেন। কে কি বলল সেটা পরে দেখা যাবে। আস্তে আস্তে দেখবেন আপনি লেখালেখিতে দক্ষ হয়ে যাবেন।

এছাড়া যদি আপনি ভিডিও ব্লগ তৈরির ইচ্ছা থাকে। তাহলে চেষ্টা করবেন কোনো যায়গায় গেলে ব্লগ তৈরি করতে। যদিও আপনারটা অতো সুন্দর হবে না। যদিও এই ভিডিও দিয়ে আপনি ফেমাস ইউটিউবার হয়ে যাবেন না কিন্তু এই ভিডিওটা আপনার স্মৃতি হয়ে থাকবে। 

এছাড়া ফটো & ভিডিও ইডিটিং কোর্স করে রাখতে পারেন যেগুলো আপনার ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। এককথায় নফসকে আপনাকে কন্ট্রোল করতে দিবেন না। নফসকে কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত রাখবেন। নিফসকে অবসর দিয়ে দিলে সে এমন অপ্রয়োজনীয় কাজেই নিজের অধিকাংশ সময় নষ্ট করবে।

আর বাছাইকৃত ডকুমেন্টারি সিরিজ গুলো দেখার সময় অবশ্যই নোট নিবেন। আর কোনো বই পড়া শেষ হলে সেই বই সম্পর্কে রিভিউ দিবেন। যদিও আপনার বই রিভিউ প্রথম দিকে পারফেক্ট হবে না! কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আপনি আপনার লেখার উন্নতি লক্ষ্য করবেন।

আর বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করুন। অনেকে অবাক হয়ে যেতে পারেন। এখানে আবার মৃত্যুর কথা আসল কোথা থেকে! আসলে মৃত্যু আপনাকে এই পৃথিবীতে আসার কারণ মনে করিয়ে দেয় , আপনার জীবনের মূল্য & পৃথিবীতে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য গুলো কে মনে করিয়ে দেয়, আপনাকে আপনার সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কে আরো সচেতন করে & আরো বেশি প্রোডাক্টিভ করে। এতে করে আপনি এই অপ্রয়োজনীয় সিরিজ & মুভি দেখে সময় নষ্ট না করে নিজের জন্য ও সমাজের জন্য ভালো কিছু করবেন। 

বেশি কিছুর দরকার নেই। জীবনে ‘প্রত্যাশা’র পরিমাণটা কমিয়ে দিন। অল্পে তুষ্ট থাকুন। মনটা ফুরফুরে থাকবে। এইসব আসক্তি থেকে অনেকাংশে বেঁচে যাবেন, ইনশাআল্লাহ্।

একবার শুধু মন দিয়ে ভাবুন—আমাদের বেঁচে থাকার কী গ্যারান্টি আছে? হঠাৎ করেই তো জীবনের রঙ বদলে যায়; গন্তব্য ভিন্ন হয়ে যায়। কেন তাহলে আমরা জীবন নিয়ে এত এত স্বপ্ন দেখি? অথচ মুহূর্তের মধ্যেই মৃত্যু আমাদের সকল স্বপ্নকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়!

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি কথা মনকে রিফ্রেশ করে। তিনি বলেছেন, এমন কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই, যা মৃত্যুর স্মরণ দ্বারা দূর করা যায় না।

অর্থাৎ, আপনি যত দুঃখ-কষ্ট বা বিপদ-আপদেই থাকুন না কেনো, যখন মনের গভীর থেকে উপলব্ধির সাথে মৃত্যুর বাস্তবতা নিয়ে চিন্তা করবেন, তখন আর কোনো দুঃখ-কষ্টেই আপনি ভেঙে পড়বেন না। কারণ, মৃত্যুর চেয়ে বড় বিপদ আর নেই। অথচ, সেটি যেকোনো মুহূর্তেই আসতে পারে।

আমি আপনাদের বলছি না, মৃত্যুর ভয়ে জীবনটাকে শুকনো করে ফেলুন। তবে, জীবনের দুঃখ-কষ্টের অনুভূতিকে হালকা করতে এবং আখিরাতমুখী জীবনের মোটিভেশন পেতে মৃত্যুকে স্মরণ করতেই হবে। মৃত্যুর স্মরণের মাধ্যমে আমরা গুনাহ থেকে বাঁচতে পারবো এবং আল্লাহর সাক্ষাতের জন্য উদগ্রীব হতে পারবো। ইনশাআল্লাহ্।  

মুভি & টিভি সিরিজের ভালো দিকঃ 

একটা জিনিসের যে সব খারাপ হবে ব্যাপারটা এমন না। এর কিছু ভালো দিকও আছে। যেমনঃ আমার ইংরেজি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে & বিভিন্ন দেশের কালচার সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে মুভি & টিভি সিরিজ সাহায্য করেছে। তবে অল্প কিছু ভালোর জন্য আমি আমার বড় ক্ষতি করে রাজি না।

যেমন আল্লাহ কোরআনে বলেছেনঃ মদে ভালো আছে তবে খারাপ বেশি তাই হারাম। ঠিক এখানেও সেইম। তবে যারা ইংরেজি শিখতে চাচ্ছেন তারা সাবটাইটেল দিয়ে ডকুমেন্টারি সিরিজ দেখতে পারেন। এতে আপনার ইংরেজির দক্ষতা ও বাড়বে আবার বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান ও অর্জন হবে। এছাড়া কিছু ইউটিউব চ্যানেল ফলো করতে পারেন। 

(সময় পেলে আমার পছন্দের ইউটিউব চ্যানেল গুলো শেয়ার করব এখানে ইনশাআল্লাহ)

আল্লাহ আপনি আমার ভাইদের এই আসক্তি থেকে বের হয়ে প্রোডাক্টিভ কোনো কাজে লেগে থাকার তৌফিক দান করুন। 

আমিন। 

আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ ৫ (সোশ্যাল মিডিয়া & ইন্টারনেট আসক্তি দূরীকরণ)

প্রথমেই বলে নেই, আপনি বুঝবেন কিভাবে আপনি সোসাল মিডিয়ায় আসক্ত! 

আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত কি-না তা জানতে নিজেকে নীচের এই ৬টি সহজ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুনঃ

১. আপনি কি সোশ্যাল মিডিয়ায় অধিক সময় ব্যয় করেন, যখন অফলাইনে থাকেন, তখনও কি এ বিষয়ে ভাবেন?

২. আপনি সোশ্যাল মিডিয়া আরো বেশি ব্যবহার করার জন্য অনুশোচনা বোধ করেন?

৩. আপনি কি ব্যক্তিগত সমস্যা ভুলতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন?

৪. আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার কমাতে চাচ্ছেন, কিন্তু পারছেন না?

৫. সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে না পেরে আপনি কি অসস্তিবোধ করেন?

৬. সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার আপনার চাকরি, পারিবারিক সম্পর্ক বা পড়াশুনার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে?

আপনি যদি এই প্রশ্নের কয়েকটির বিপরীতে ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তর দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি সোসাল মিডিয়া & ইন্টারনেটে আসক্ত একজন। 

এখন আসি কিভাবে আপনি এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসবেন। 

আমি পোস্টটি ২ ভাগে বিভক্ত করেছি। আমি প্রথম ভাগে সোসাল মিডিয়ার খারাপ দিক গুলো উল্লেখ করব। এবং ২য় ভাগে কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেট ব্যবহার কন্ট্রোলে রাখবেন তা সম্পর্কে কিছু টিপস শেয়ার করব।

সোশাল মিডিয়া ও ইন্টারনেট এর খারাপ দিকঃ

1. বিষণ্নতা এবং উদ্বেগঃ

আপনি কি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ব্রাউজিং প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা ব্যয় করেন? সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে খুব বেশি সময় ব্যয় করা আপনার মেজাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারকারীরা উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার লক্ষণ সহ দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের রিপোর্ট করার সম্ভাবনা বেশি।

কারণ সোশ্যাল মিডিয়া আপনাকে অন্য সবার জীবনের নির্বাচিত সেরা অংশগুলি দেখতে দেয়, যা আপনি আপনার নিজের জীবনের নেতিবাচকগুলির সাথে তুলনা করেন৷ অন্য লোকেদের সাথে নিজেকে তুলনা করা উদ্বেগের একটি নিশ্চিত পথ, এবং সোশ্যাল মিডিয়া এটিকে সহজ করে তুলেছে।

2. FOMO (Fear of Missing Out)

কোনো কিছু হারিয়ে যাওয়ার ভয় (FOMO) এমন একটি ঘটনা যা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সাথেই জন্মেছিল। আশ্চর্যজনকভাবে, এটি সামাজিক মিডিয়ার সবচেয়ে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবগুলির মধ্যে একটি।

এর কারণে আপনি সবসময় একটা ভয়ে থাকেন যে, না জানি আপনার কি হয়ে গেল বা কি হারিয়ে গেল। উদাহরণস্বরূপ, আপনার পোস্ট করা ছবিতে কে লাইক করল আর কে কমেন্ট করল তা দেখার জন্য আপনি ক্রমাগত আপনার নোটিফিকেশন গুলো দেখতে থাকেন। অথবা আপনার বন্ধু ও পছন্দের সেলিব্রিটিদের কোনো পোস্ট আপনার মিছ হয়ে গেল কি না তা নিশ্চিত করতে সারাদিন আপনার ফেসবুক ফিডে ঘুরতে থাকেন। 

3. অবাস্তব প্রত্যাশাঃ

বেশিরভাগ লোকেরা সম্ভবত এখনই জানেন, সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের মনে জীবন এবং বন্ধুত্বের অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি করে।

বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের অনলাইন সত্যতার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। লোকেরা শুধু তাদের ভালো দিক গুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে, Facebook ও Instagram এ বিভিন্ন ফিল্টার ব্যবহার করে ছবিকে আরো সুন্দর করে শেয়ার করে। 

কিন্তু বাস্তবে, এই সব প্রহসন কিনা তা আপনার জানার উপায় নেই।

এই জগাখিচুড়ি থেকে বেরিয়ে আসার একটি সহজ উপায় হল প্রত্যেকের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা বলা বন্ধ করা।

4. নিজের শরীর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাঃ

ইনস্টাগ্রামে আপনি যদি জনপ্রিয় ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টগুলি দেখেন, আপনি অবিশ্বাস্যভাবে সুন্দর লোকেদের তাদের নিখুঁত আকারের শরীরে, দামি পোশাক পরা দেখতে পাবেন। আর এগুলো দেখে দেখে আপনার নিজেকেই নিজের পছন্দ হবে না। আর এই নিয়ে আপনি সব সময় এক অশান্তির মধ্যে থাকবেন। 

আজ, শরীরের ইমেজ প্রত্যেকের জন্য একটি সমস্যা। এটা মনে রাখা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ যে সবাই মানুষ। কেউ রাতারাতি সুপারমডেলের মতো হয়ে যায় না। 

এ থেকে বাঁচতে নিজেকে এমন লোকেদের সাথে ঘিরে রাখুন যারা আপনাকে ভালোবাসে, আপনার ইনস্টাগ্রাম সৌন্দর্যকে নয়। 

5. অস্বাস্থ্যকর ঘুমঃ

এর সাথে তো মোটামুটি সবাই পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়াতে অত্যধিক সময় ব্যয় করা খারাপ ঘুমের কারণ হতে পারে। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে যে সোশ্যাল মিডিয়ার বর্ধিত ব্যবহার আপনার ঘুমের মানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ঘুমের ধরণ অনিয়মিত হয়ে গেছে এবং দিনের অনান্য কাজে প্রোডাক্টিভিটি হ্রাস পেয়েছে, তাহলে আপনি সামাজিক মিডিয়া ব্রাউজ করার সময় কমানোর চেষ্টা করুন।

রাতে বিছানায় আপনার ফোন ব্যবহার করার কারণে এটা বেশি হয়। তাই বিছানায় ঘুমানোর জন্য যাওয়ার সময় ফোন নিবেন না। সোশ্যাল মিডিয়া গুলোকে আপনার মূল্যবান ঘুম কেড়ে নিতে দেবেন না।

6. সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি অত্যধিক আসক্তিঃ
 
সোশ্যাল মিডিয়া সিগারেট এবং অ্যালকোহলের চেয়ে বেশি আসক্তি হতে পারে। এই একটি আসক্তি আপনাকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। 

অত্যধিক সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তির কারণে আপনি মানুষিক রোগেও আক্রান্ত হতে পারেন। যাকে Problematic social media use বলে। বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে দেখতে পারেনঃ 
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Problematic_social_media_use

সোশাল মিডিয়ার আসক্তি থেকে বাঁচার উপায়ঃ

(সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি ও মোবাইল ফোন আসক্তি, একটি আরেকটির সাথে সরাসরি জড়িত। তাই "মোবাইল ফোনের আসক্তি দূরীকরণ" অংশটুকু সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে)

মোবাইল ফোনের আসক্তি দূরীকরণঃ
https://www.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1358443781225416/ 

১. অ্যাপব্লকার:

ইওর আওয়ারঃ

এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্য অ্যাপব্লক করে রাখা যায়। বিশেষ কাজের সময় চাইলে নির্দিষ্ট কয়েকটি অ্যাপ চিহ্নিত করেন সেগুলোকে ব্লক করে রাখা যাবে। এ সুবিধায় ব্যবহারকারী ব্লক করা অ্যাপগুলোর নোটিফিকেশনগুলো অ্যাপ আনব্লক করার পরে দেখতে পাবেন।

এতে রয়েছে পাসওয়ার্ড ব্যবহারের সুবিধা। ফলে অন্য কেউ চাইলে সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবে না। এটির মাধ্যমে প্রতিদিন টাইম লিমিট করে দিতে পারেন।

অ্যাপটি ব্যবহারকারীর ফোন ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী বলে দেবে আসক্তির লেভেল সম্পর্কে। তারপর আসক্তি কাটিয়ে উঠতেও সহায়তা করবে এটি। ব্যবহারকারীরা এটির মাধ্যমে প্রতিদিন কতটুকু সময় ফোনে কাটাবেন সেই লক্ষ্য নির্ধারণ করে আসক্তি কমাতে পারবেন।

অ্যাপটির সাহায্যে কত সময় ফোনের স্ক্রিন অন ছিল, কোন সময় কোন অ্যাপ ব্যবহার করেছেন ইত্যাদি তথ্য টাইমলাইন আকারে পাওয়া যাবে।

App link: YourHour = https://play.google.com/store/apps/details?id=com.mindefy.phoneaddiction.mobilepe 

স্টে ফোকাসঃ

স্মার্টফোনে আসক্তির অন্যতম কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি দুর্বলতা। যারা একটু পরপর ফেসবুক বা টুইটারে ঢু মারেন। এ অ্যাপটি তাদের আসক্তি কমাতে সহায়তা করতে পারবে।

এই এপসটাও ইওর আওয়ার এর মতো। এর মাধ্যমে প্রতিদিন কতবার ফেসবুক অ্যাপ চালু করেন বা কত সময় চালাচ্ছেন এমন হিসাব জানতে পারবেন; তা থেকে কতটা সময় নষ্ট হচ্ছে তা জেনে নিতে পারবেন।

এর মাধ্যমে আপনি ফোনে থাকা কোন অ্যাপ কতবার চালু করবেন তা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। পরে অ্যাপটি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে আপনি নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে বেশি অ্যাপটি ব্যবহার করতে চাইছেন।

 App link: Stay Focused = https://play.google.com/store/apps/details?id=com.stayfocused
 
এখন প্রশ্ন হচ্ছে , যে জিনিসের প্রতি আসক্তি থাকে সেটির মাধ্যমেই আসক্তি কাটিয়ে ওঠা কতটা সম্ভব?

এখানে বিষয়টা লোহা দিয়ে লোহা কাটার মতো।  

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যে কোনো ধরনের আসক্তি কমানোর পদ্ধতি ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হয়। উদাহরণ স্বরূপ অনেকে একদিনে ধূমপানের মতো আসক্তিও ছেড়ে দিতে পারে, আবার অনেকে ছাড়েন ধীরে ধীরে। ফলে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ সবার মোবাইল আসক্তির জন্য কার্যকর হবে, এমনটা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে চেষ্টা করে দেখতে সমস্যা কোথায়? 

আর আমাদের নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে এই আসক্তি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য। 

২. সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সময় নির্ধারণঃ

স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করুন। দিনে কতবার স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন তা ঠিক করে নিন। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন দিনে ২০ মিনিটের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া দেখবেন না। এ ছাড়া খাওয়া ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন না। 

এক্ষেত্রে উপরের ২টা এপস উপকারে আসবে। এই এপস গুলো এই নির্দিষ্ট সময় শেষে নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে আপনাকে সংকেত দিয়ে দিবে যে আপনি 20 মিনিট ফেসবুক ব্যবহার করে ফেলেছেন। 

৩. স্মার্টফোন নিয়ে বিছানায় নয়ঃ

ঘুমানোর আগে ফোন বন্ধ করে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। ঘুমানোর সময় ফোন বন্ধ করলে তেমন কোনো ক্ষতি নেই ভেবে ফোন বন্ধ করে দিন। ঘুম কম হওয়া বা অনিদ্রার অন্যতম একটি কারণ স্মার্টফোন আসক্তি। অনেকে সকালে ঘুম থেকে ওঠার জন্য স্মার্টফোনে অ্যালার্ম সেট করেন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ব্যবহারকারীরা ঘুম থেকে উঠে অ্যালার্ম বন্ধ করে ফোনের নোটিফিকেশন চেক করা শুরু করে দেন। এতে অনেক সময় কেটে যায়। এমন সমস্যা এড়াতে স্মার্টফোনে অ্যালার্মের বদলে অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধঃ

আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সরিয়ে ফেলুন। স্মার্টফোনে ফেসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপগুলো দরকারি হলেও আসক্তি কমাতে চাইলে এসব অ্যাপ সরিয়ে ফেলতে হবে। যেকোনো একটা যোগাযোগ মাধ্যমের এপ ব্যবহার করুন। এতে সময় অপচয় কম হবে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোম্পানি গুলো তাদের এপগুলোকে আপনাকে আসক্ত করার জন্য ডিজাইন করে। কারন আপনি যত বেশিক্ষণ তাদের এপ ব্যবহার করবেন তত বেশি তারা এড সো করতে পারবে। এবং তাদের আয়ও বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে এপ আনইনস্টল করে প্রয়োজনে ওয়েবসাইট ব্যবহার করূন। কারন এটা আপনার সোসাল মিডিয়ার প্রতি আকর্ষণ কমিয়ে আনবে।

(এইটা খুবই কার্যকরী একটা পদ্ধতি। ব্যক্তিগত ভাবে এটা আমার আসক্তি কমিয়ে আনতে সহযোগিতা করেছে)

৫. বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনঃ

সোশ্যাল মিডিয়ায় নষ্ট করা সময়টা আপনার পছন্দের বিষয়ের বই পড়ে কাটাতে পারেন। 

৬. শারীরিক ব্যায়াম ও খেলাধুলা করূনঃ

সোশ্যাল মিডিয়ার সময় থেকে নিজের স্বাস্থ্যের জন্য কিছু সময় বরাদ্দ নিয়ে নিন। নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা মাঝে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। 

৭. মেডিটেশনঃ

আমি আগেও বলেছিলাম নামাজ ও আল্লাহর স্মরণ থেকে বড় মেডিটেশন আর কিছু নেই। তাই নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করার চেষ্টা করুন। আল্লাহর কাছে সাহায্য পার্থনা করতে থাকুন। 

৮. মৃত্যুকে স্মরণ করুনঃ

অনেকে অবাক হয়ে যেতে পারেন। এখানে আবার মৃত্যুর কথা আসল কোথা থেকে! আসলে মৃত্যু আপনাকে এই পৃথিবীতে আসার কারণ মনে করিয়ে দেয় , আপনার জীবনের মূল্য & পৃথিবীতে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য গুলো কে মনে করিয়ে দেয় । 

এতে করে আপনি আপনার লাইফ নিয়ে আরো সিরিয়াস হবেন। এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অযথা সময় নষ্ট না করে নিজের জন্য ও সমাজের জন্য ভালো কিছু করবেন। 

বেশি কিছুর দরকার নেই। জীবনে ‘প্রত্যাশা’র পরিমাণটা কমিয়ে দিন। অল্পে তুষ্ট থাকুন। মনটা ফুরফুরে থাকবে। সোশ্যাল মিডিয়ার ডিপ্রেশন থেকে অনেকাংশে বেঁচে যাবেন, ইনশাআল্লাহ্।

একবার শুধু মন দিয়ে ভাবুন—আমাদের বেঁচে থাকার কী গ্যারান্টি আছে? হঠাৎ করেই তো জীবনের রঙ বদলে যায়; গন্তব্য ভিন্ন হয়ে যায়। কেন তাহলে আমরা জীবন নিয়ে এত এত স্বপ্ন দেখি? অথচ মুহূর্তের মধ্যেই মৃত্যু আমাদের সকল স্বপ্নকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়!

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি কথা মনকে রিফ্রেশ করে। তিনি বলেছেন, এমন কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই, যা মৃত্যুর স্মরণ দ্বারা দূর করা যায় না।

অর্থাৎ, আপনি যত দুঃখ-কষ্ট বা বিপদ-আপদেই থাকুন না কেনো, যখন মনের গভীর থেকে উপলব্ধির সাথে মৃত্যুর বাস্তবতা নিয়ে চিন্তা করবেন, তখন আর কোনো দুঃখ-কষ্টেই আপনি ভেঙে পড়বেন না। কারণ, মৃত্যুর চেয়ে বড় বিপদ আর নেই। অথচ, সেটি যেকোনো মুহূর্তেই আসতে পারে।

আমি আপনাদের বলছি না, মৃত্যুর ভয়ে জীবনটাকে শুকনো করে ফেলুন। তবে, জীবনের দুঃখ-কষ্টের অনুভূতিকে হালকা করতে এবং আখিরাতমুখী জীবনের মোটিভেশন পেতে মৃত্যুকে স্মরণ করতেই হবে। মৃত্যুর স্মরণের মাধ্যমে আমরা গুনাহ থেকে বাঁচতে পারবো এবং আল্লাহর সাক্ষাতের জন্য উদগ্রীব হতে পারবো। ইনশাআল্লাহ্। 

আল্লাহ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন।

আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ ৪ (পর্ণগ্রাফি এর আসক্তি দূরীকরণ)

সতর্কতাঃ 

প্রথমেই একটা বিষয়ে সতর্ক করে দেই। যেহেতু আপনি এই পোস্টটি পড়া শুরু করেছেন সেহেতু হতে পারে আপনি হয়তো পর্ণগ্রাফিতে আসক্ত। সেজন্য এসম্পর্কে কোনো প্রশ্ন বা কোনো কিছু জানতে চাইলে কমেন্টে কোনো কিছু না বলার অনুরোধ করছি। 

কারণ-আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। 
[বুখারিঃ ৬০৬৯ ]

তাই কোনো বিষয়ে কোনো সমস্যা থাকলে কমেন্টে না লিখে ইনবক্সে এসএমএস করতে পারেন। আমি সাহায্য করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। 

এখন আসল কথায় আসি। প্রথমেই আমরা জানব পর্ণগ্রাফি আসক্তি থেকে বাঁচার জন্য রাসূল (সাঃ) এর উপদেশ কি। 

ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: "আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে কিছু যুবক ছিলাম যাদের কিছুই ছিল না। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: হে যুব সমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্য রাখ তাদের উচিত বিয়ে করে ফেলা। কেননা বিয়ে দৃষ্টি অবনতকারী ও লজ্জাস্থানকে হেফাযতকারী। আর যার সামর্থ্য নেই তার উচিত রোযা রাখা। কেননা রোযা যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী।" 
[বুখারিঃ ৫০৬৬]

উপরের হাদিস অনুযায়ী, লজ্জাস্থানকে হেফাজতের জন্য প্রথমেই বিয়ে চেষ্টা করতে হবে। আর এখন বিয়ে করার সামর্থ্য না থাকলে রোজা রাখতে হবে।

এখন যাদের সামর্থ্য আছে তারা তো বিয়ে করে ফেললেন। আর যারা এখন বিয়ে করতে পারছেন না তারা রোযা কিভাবে রাখবে তা নিয়ে ভাবছেন?

তারা রাসুল (সাঃ) এর নফল সিয়াম গুলো পালন করতে পারেন। 

যেমনঃ 

সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজাঃ

এ দুই দিন রোজা রাখা সুন্নত। নবী (সা.) এ দুই দিন রোজা রাখতেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহর কাছে) আমল উপস্থাপন করা হয়। তাই আমার আমল উপস্থাপন করার সময় রোজারত থাকাকে পছন্দ করছি। (তিরমিজি) 

আইয়ামে বিজের রোজঃ

প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজাই আইয়ামে বিজের রোজা। নবী (সা.) এ রোজাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে রাখতেন। যেহেতু প্রত্যেক ভালো কাজের সওয়াব ১০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাই যে ব্যক্তি প্রতি মাসে এ তিনটি রোজা রাখবে সে সারা মাস রোজার সওয়াব পাবে। আর এভাবে যে ব্যক্তি প্রতি মাসেই তিন দিন রোজা রাখবে সে সারা বছরই রোজা রাখার সওয়াব পাবে। 

এছাড়া আরো আছে আশুরার রোজা, শাবানের রোজা, শাওয়ালের ছয় রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, আরাফার দিনের রেজা। 

এ রোজা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের লিংক দেখুনঃ

⬇️⬇️⬇️
www.bd-pratidin.com/amp/editorial/2018/07/07/343201

কোনদিন কয়টায় সেহেরি ও ইফতারের সময় এবং বিভিন্ন রোজার নিয়মিত আপডেট পেতে Muslims Day নামক এপটি ইনস্টল করে নিতে পারেন।

এপ লিংকঃ https://play.google.com/store/apps/details?id=theoaktroop.appoframadan 

আর পর্ণ আসক্তি প্রবল হওয়ার কারনে অনেকেই বিয়ে & সাওমের মাধ্যমেও এই আসক্তি দূর করতে পারে না। সে জন্য আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে পর্ণগ্রাফির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানতে হবে। পর্ণগ্রাফি কিভাবে আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বিপর্যয় নিয়ে আসে এ সম্পর্কে কয়েকটা বই ও লেকচার সিরিজ শেয়ার করতেছি। আশা করি সবাই উপকৃত হবেন। 

পর্ণগ্রাফি আসক্তি দূর করতে কার্যকরী কিছু বই এর নামঃ

1. মুক্ত বাতাসের খোঁজে
ডাউনলোড লিংকঃ https://i-onlinemedia.net/downloads/books/general/Mukto_Bateser_Khoje.pdf
2. ঘুরে দাঁড়াও
3. মানসাঙ্ক 
(এ ৩টা বই মাস্ট পড়তে হবে) 

4. যৌবনের মৌবনে
5. মনের উপর লাগাম
6. কারা জান্নাতী কুমারীদের ভালবাসে
7. আসক্তি: সমাজ ধ্বংসের হাতিয়ার
8. বেলা ফুরাবার আগে
9. আত্মার ব্যাধি ও প্রতিকার
10. আসক্তি থেকে মুক্তি 
11. শেষের অশ্রু
12. ইলমের ভালোবাসায় চিরকুমার উলামায়ে কেরাম (☺️ এই বইটাও পড়ে দেখতে পারেন। তাহলে নিজেকে কন্ট্রোল করা কিছুটা সহজ হবে। 🙃)

[কিছু বই নতুন & কিছু বই এর পিডিএফ অনুমোদিত না। তাই এখানে লিংক শেয়ার করলাম না। যাদের পক্ষে সম্ভব তারা কিনে নিবেন। আর কেনা সম্ভব না হলে গুগলে সার্চ করুন বা ইনবক্সে জানান] 

ইউটিউব লেকচার সিরিজঃ

বাংলা লেকচারঃ

মুক্ত বাতাসের খোঁজেঃ https://youtube.com/playlist?list=PL6AAfPzsBJ6ubeJ9ciqVzP2PnZt9JpOGI

পর্ণ/হস্থমৈথুন থেকে বাঁচার উপায়ঃ
https://m.youtube.com/playlist?list=PL6AAfPzsBJ6tGBUASxjsQwATqzNCZrIxf

পর্ণ আসক্তি সিরিজঃ
https://youtube.com/playlist?list=PL2FHm7GZu6dmPSPp1Ym4R2SpIgWHFRFHE 

English Lecture:

Lost In pornland:
https://youtube.com/playlist?list=PLwNeHLk_z0aRfetl--Pk_5pxDinXGBDzL

Your brain on porn:
https://youtube.com/playlist?list=PLOcbPczYKTQb7Nyl5QmzZrSGcTeaAk92S 

উর্দুঃ

Porn Addiction:
https://youtube.com/playlist?list=PL5KgjwrPtPys5NxYfm2BH6v_DFXj8WdOB

আমাদের অনেকেই অনেক চেষ্টা করার পরও অনেক সময় ব্যর্থ হই। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের সাথে থাকা ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এই মোবাইল ফোন ও পিসির মাধ্যমে অনেকেই পর্ণগ্রাফির র্অন্ধকার জগতে চলে যায়। তাই এখন কিভাবে আপনার ফোনে ও পিসির মাধ্যমে পর্ণ দেখা বন্ধ করবেন তা নিয়ে ২টা ভিডিও শেয়ার করব। আশা করি এতে সমস্যার সমাধান হবে। 

পিসিতেঃ

পিসিতে পর্ণ সাইট বন্ধের জন্য k9 software ব্যবহার করতে পারেন। কিভাবে এই সফটওয়্যার ডাউনলোড & ব্যবহার করবেন তা নিচের ভিডিও লিংকে পেয়ে যাবেন।
https://youtu.be/iTsH6lNGdCk

মোবাইলেঃ

আর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কিভাবে করবেন তা নিচের ভিডিও লিংকে পেয়ে যাবেন।
https://youtu.be/x3oeNvKH2CU

এত কিছুর পরও শয়তানের ধোঁকায় পরে অনেকেই আবার ভুলটা করে ফেলতে পারেন। তবে ভেঙ্গে পরা যাবে না & হতাশ হওয়া যাবে না। চেষ্টা করে যেতে হবে। 

আজ ১ দিন নিজেকে সংযত করতে পারলে পরবর্তীতে ২ দিন/৭দিন । এভাবে নিজেকে সংযত করতে হবে। আর অনুপ্রেরণার জন্য "মুক্তি বাতাসের খোঁজে" এর ওয়েবসাইট, পেইজ ও গ্রুপে প্রকাশিত অনেক ভাই এর গল্প গুলো পড়তে পারেন। এতে এই আসক্তি যে দূর করা সম্ভব তা বুঝতে পারবেন & আগ্রহ পাবেন। 

আর সর্বোপরি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। এর থেকে বড় অস্ত্র আপনার আমার জন্য আর কিছুই নেই। সম্ভব হলে এখনি ওযু করে নামাজে দাড়িয়ে যান। দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে এই আসক্তি থেকে বাঁচার আকুতি জানান। 

আল্লাহ তুমি আমাদের ভাইদের জন্য কাজটা সহজ করে দাও।

আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ ৩ (মোবাইল ফোন এর আসক্তি দূরীকরণ)

"হঠাৎ একবার একটি বিপ্লবী পণ্য আসে যা সবকিছু পরিবর্তন করে দেয়"

এই উক্তিটি স্টিভ জবস ২০০৭ সালে ১ম iPhone introduce করার সময় বলেছিলেন। আজ আমরা এর বাস্তবতা দেখতে পারছি। 

মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে এতটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে গেছে যে মোবাইল ফোন ছাড়া আমরা আমাদের ১টা দিন কল্পনা করতে পারি না। 

আমাদের ফোনগুলো ডিজাইনই করা হয় আমাদের আসক্ত করার জন্য। আমাদের ফোন গুলোতে কি নেই? Camera, Telegraphs, telephones, radios, movies, television, video games, even books সবকিছুই আছে। একজন মানুষকে আসক্ত করতে যা কিছু প্রয়োজন প্রায় সবই এখানে আছে। 

মোবাইল ফোন আবিষ্কারের উদ্দেশ্য মানুষের উপকার হলেও এর ক্ষতিকর দিক অনেক বেশি। 

প্রথমেই একটা বিষয় ক্লিয়ার করে নেই। এই পোস্টে আমি মোবাইল ফোনের উপকারিতা অস্বীকার করছি না বা মোবাইল ফোনের যে পজেটিভ ব্যবহার করা সম্ভব তাও অস্বীকার করছি না। 

সমস্যাটা মোবাইল ফোন না। সমস্যাটা হচ্ছে মোবাইল ফোনের সাথে আমাদের সম্পর্কটা। আমি চেষ্টা করব কিভাবে আপনি আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহারকে নিজের আয়ত্তে রাখবেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে। 

এই পোস্টটি আমি কয়েকটি ভাগে করব & প্রতিটি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। 

১. কিভাবে বুঝবেন আপনি মোবাইল ফোনে আসক্ত
২. মোবাইল ফোন আসক্তির সমস্যা সমূহ
৩. মোবাইল ফোনের আসক্তি দূরীকরণ 
৪. ইসলামে মোবাইল ফোন ব্যবহার: বৈধতার সীমা কতটুকু? 

(১) কিভাবে বুঝবেন আপনি মোবাইল ফোনে আসক্তঃ

• প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠার পর যে জিনিসটা আপনি সর্বপ্রথম হাতে নেন & ঘুমাতে যাওয়ার আগে যে জিনিসটা সর্বশেষ হাত থেকে রাখেন ওটা কি আপনার মোবাইল ফোন? 

• সময় দেখতে বা অল্প একটু সময় মোবাইলটা হাতে নিলেই ১/২ ঘন্টা চলে যায়? সময় কখন চলে যায় বুঝতেই পারে না? 

• আপনি চান আপনার মোবাইল ফোন যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করতে কিন্তু পারছেন না?

উপরে যে ৩টা প্রশ্ন আমি উল্লেখ করেছি সে প্রশ্ন গুলোর উত্তর যদি হ্যাঁ হয়। তাহলে আপনি মোবাইল ফোনে আসক্ত একজন। 

আর যখন আপনি মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে যাবেন। তখন আপনি নিজ থেকেই বুঝতে পারবেন যে আপনি মোবাইল ফোনে আসক্ত। 

এরপরও কেউ যদি সায়েন্টিফিক ভাবে জানতে চান আপনি মোবাইল ফোনে কতটুকু আসক্ত। তাহলে নিচের লিঙ্ক থেকে Mobile phone addiction test টি করতে পারেন। 
⬇️⬇️⬇️
https://islamicresourcelibrary.blogspot.com/2021/07/how-can-you-know-that-you-are-addicted.html

(২) মোবাইল ফোন আসক্তির সমস্যা সমূহঃ

মোবাইল ফোন এর সমস্যা এত বেশি যে এগুলো দেখলে মনে হয় মানুষ এসব জানার পরও কিভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে? 

মোবাইল ফোন আপনার মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে আপনার স্মৃতিশক্তি, চোখ, কান এর বিপুল ক্ষতি করে থাকে। 

মোবাইল ফোন কিভাবে আপনার মস্তিষ্কের ক্ষতি করে বিস্তারিত জানতে নিচের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। 
⬇️⬇️⬇️
https://www.dw.com/en/is-your-mobile-phone-damaging-your-brain/a-45020000

এছাড়া মোবাইল ফোনে আরো অনেক সমস্যা রয়েছে তা হলঃ

১. হারানোর ভয়

মোবাইল ঠিক জায়গায় আছে কিনা তা নিয়ে মন সব সময় সতর্ক থাকে। মোবাইল হারানোর ভয় থেকে মনের মধ্যে জন্ম নেয় এক সমস্যা। গবেষকেরা মোবাইলের সঙ্গে যোগাযোগ হারানোর এই ভয়জনিত অসুখের নাম দিয়েছেন ‘নোমোফোবিয়া’ যার পুরো নাম ‘নো মোবাইল-ফোন ফোবিয়া’। 

২. ঘুমের মধ্যে প্রভাব

মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত ব্যবহার ঘুমের মধ্যেও প্রভাব ফেলে। অসময় বার্তা পাঠানো, চ্যাটিং করার ফলে ঘুমের মধ্যে সমস্যা হয়। 

মনোবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দুশ্চিন্তা, কাজের চাপ, ফোন নিয়ে দিন কাটানো, এমন অবস্থায় স্লিপ টেক্সটিং ঘটতে পারে। রাতে বিছানার পাশে মুঠোফোন না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।

৩. কমতে পারে চোখের জ্যোতি

যুক্তরাজ্যের চক্ষু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে দৃষ্টি বৈকল্য সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে মায়োপিয়া বা ক্ষীণ দৃষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সাধারণত চোখ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রেখে তা ব্যবহার করেন। তবে, অনেকের ক্ষেত্রে এ দূরত্ব মাত্র ১৮ সেন্টিমিটার। সংবাদপত্র, বই বা কোনো কিছু পড়ার ক্ষেত্রে সাধারণত চোখ থেকে গড়ে ৪০ সেন্টিমিটার দূরত্ব থাকে। 

চোখের খুব কাছে রেখে অতিরিক্ত সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে জিনগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্ষীণদৃষ্টি সৃষ্টির জন্য যা ভূমিকা রাখতে সক্ষম। গবেষকেরা একে ‘এপিজেনেটিকস’ সংক্রান্ত বিষয় বলেন। গবেষকেরা দীর্ঘক্ষণ ধরে স্মার্টফোনে চোখ না রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন। 

দৈনিক কিছু সময় মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন তাঁরা। স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে বয়স বিবেচনার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকেরা।

৪. কানে কম শোনা

ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কানের সমস্যা তৈরি হতে পারে। হেডফোন ব্যবহার করে উচ্চশব্দে গান শুনলে অন্তকর্ণের কোষগুলোর ওপর প্রভাব পড়ে এবং মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক আচরণ করে। 

৫. ঘুম নেই

স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, ডেস্কটপের অতিরিক্ত ব্যবহার ও অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখার ফলে সবচে বেশি দেখা দেয় ঘুমের সমস্যা বা নিদ্রাহীনতা। 

৬. টয়লেট সিটের চেয়েও নোংরা

মার্কিন গবেষকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, টয়লেট সিটের তুলনায় ১০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে ফোনে। মুঠোফোন নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এটি জীবাণুর অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে। 

৭. শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলোর ক্ষতি

অতিরিক্ত সময় ধরে মেসেজ বা বার্তা টাইপ করা হলে আঙুলের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হতে পারে এবং অবস্থা বেশি খারাপ হলে আর্থরাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

এ ছাড়াও অনেকে অনেকেই কাজের সময় মুঠোফোন ব্যবহার করতে গিয়ে কাঁধ ও কানের মাঝে ফোন রেখে কথা বলেন। অনেকেই অতিরিক্ত ঝুঁকে বসে দীর্ঘ সময় ধরে বার্তা পাঠাতে থাকেন। বসার ভঙ্গির কারণেও শরীরে নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। 

চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোনে বার্তা লিখবেন না, এতে করে শরীরের জয়েন্ট বা সন্ধির সমস্যা থেকে সুস্থ থাকতে পারবেন।

সোর্সঃ প্রথম আলো & যুগান্তর

(৩) মোবাইল ফোনের আসক্তি দূরীকরণঃ

আপনার জন্য সুসংবাদ হল, 
আমরা আমাদের ফোনের অনেক নেতিবাচক প্রভাবকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারি, আমাদের কাজে মনোযোগ পুনর্নির্মাণ করতে পারেন, আমাদের স্ট্রেস কম করতে পারি, আমাদের স্মৃতিগুলিকে উন্নত করতে পারি এবং আবারো একটি ভাল রাতের ঘুম আশা করতে পারি & আমাদের ডিভাইস থেকে আমাদের জীবন ফিরিয়ে নিতে পারি।

এজন্য আমাদের ফোনের সাথে আমাদের সম্পর্কটা পরিবর্তন করতে হবে। মেডিকেলে এধরনের আসক্তি যেমনঃ সিগারেট & মাদকে আসক্ত ব্যক্তির জন্যে Mindfulness নামক চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি মূলত একটি মেডিটেশন পদ্ধতি। 

এখানে মেডিটেশন ইসলামে হালাল নাকি হারাম সে সম্পর্কে আমি কিছুই বলব না। তবে এখানে আমি আমার মতামত তুলে ধরব। 

আমার মতামত হলঃ

পৃথিবীতে যত মেডিটেশন আছে সব থেকে বড় মেডিটেশন হচ্ছে নামাজ। আর এটা প্রতিটা মুসলিমই জানে। তাই একজন মুসলিম হিসেবে আমি বলব দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ, বিশেষ করে তাহাজ্জুদের নামাজ মনযোগ সহকারে আদায় করার। কারণ এসময় আপনি একা নিরব পরিবেশে থাকেন। ফলে কঠিন মনোযোগ সহকারে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারেন। নামাজের পর কান্না করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে থাকুন। ইনশাল্লাহ আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেন। 

এখন আমি কিছু টিপস দিব যে গুলো ফলো করলে ইনশাল্লাহ আপনি অনেকখানি ফোন থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

১. ঘুমানোর সময় বালিশের পাশে মুঠোফোন নিয়ে ঘুমাবেন না। এতে ফোনের তেজস্ক্রিয়াজনিত ঝুঁকি থেকে মুক্ত হওয়া যায়। মোবাইল ফোন আপনার বিছানা থেকে দূরে বা টেবিলে রেখে শুতে যান। এতে করে ঘুম থেকে উঠেই স্মার্টফোনে চোখ রাখার অভ্যাসও কমে যাবে। 

২. কোনো মিটিং কিংবা ক্লাসে বা পড়াশোনার সময় মুঠোফোন সাইলেন্ট করে ব্যাগে কিংবা টেবিলের ড্রয়ারে রেখে দিন। এতে আপনার কাজে মনযোগ বৃদ্ধি পাবে। 

৩. খাওয়ার সময় কখনোই ফোন ব্যবহার করবেন না। খাওয়া উপভোগ করার জন্য ফোন থেকে দূরে থাকুন।

৪. YourHour, Space, ActionDash সহ বিভিন্ন অ্যাপ দিয়ে আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহার এর সময় & সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি কমাতে পারেন। এই অ্যাপগুলো আপনার মুঠোফোনে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন অ্যাপ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রেখে আপনার আসক্তি কমাতে পারে। 

এছাড়া আপনি কোন এপটা কতটুকু সময় ব্যবহার করতে চান তা সেট করে দিতে পারেন। ঐ নির্দিষ্ট সময় শেষে ঐ এপটা আপনাকে জানিয়ে দিবে যে সময় শেষ। এতে করে অতিরিক্ত সময় নষ্ট হবে না। 

৫. পড়ার অভ্যাস স্মার্টফোনে আসক্তি অনেকটা
কমিয়ে আনে। তাই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 

আগে বই পড়ার অভ্যাস না থাকার কারণে বুঝতে পারছেন না কোন বই পড়বেন? তাহলে নিচের লিঙ্ক থেকে অবশ্য পাঠ্য ১০০ বই এর লিস্টটি দেখে আসতে পারেন। 
⬇️⬇️⬇️
https://m.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1209002422836220/

৬. ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইউটিউব, টুইটারসহ সকল সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সেটিংস অপশন থেকে নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিন। যখন প্রয়োজন হবে এপস এ ঢুকে নটিফিকেশন চেক করে নিবেন। এতে আপনি কাজে ফোকাস থাকতে পারবেন। 

৭. স্মার্টফোনে আসক্তি কমাতে সাধারণ মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু করতে পারেন, যা শুধু কাজের জন্য কল দেওয়া আর খুদেবার্তা পাঠানোর জন্য ব্যবহার করবেন। যখন স্মার্টফোন এর প্রয়োজন হবে শুরু তখনই স্মার্টফোন হাতে নিবেন। 

৮. বিভিন্ন আড্ডা কিংবা খেলার মাঠে নিজের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন। বন্ধুদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার, বন্ধুদের চোখে চোখ রেখে গল্প-আড্ডায় মেতে উঠুন, এতেও মুঠোফোন আসক্তি অনেক কমে আসে।

৯. ফোনে ই-বুক পড়ার অভ্যাসের বদলে রঙিন বই পড়ার অভ্যাস করুন।

১০. ছোট বাচ্চাদের হাতে উচ্চপ্রযুক্তির স্মার্টফোন তুলে না দেওয়াই ভালো। খুব প্রয়োজন হলে সাধারণ ফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারেন।

১১. দৈনন্দিন কাজের হিসাব, মিটিং কখন, ক্লাস রুটিন সহ সাধারণ নোট গুলো লেখার জন্য মুঠোফোনের অ্যাপ ব্যবহারের চেয়ে ডায়েরিতে হাতে-কলমে লেখার অভ্যাস করুন।

১২. যানজটে বসে মুঠোফোনে মুখ না গুঁজে ব্যাগে বই রাখতে পারেন। যানজটে মুঠোফোনে গান না শুনে বা ফেসবুক ব্যবহার না করে বই পড়ার অভ্যাস করুন।

১৩. কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে সেলফি কিংবা ফোনে ছবি তোলার বদলে অনুষ্ঠানের অতিথিদের সঙ্গে পরিচিতি বাড়ান আর গল্প করার অভ্যাস করুন।

সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন, ফেমিনা, দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা

আরো বিস্তারিত জানতে এই বইটা পড়তে পারেন।
(How to breakup with your Phone) 

Download link:
⬇️⬇️⬇️
bd@b-ok@as/book/5967972/60104b
(@ এর জায়গায় ডট/. দিয়ে ওপেন করূন)

এই পোস্টটি তৈরিতে এই বইটি থেকে অনেক সাহায্য নেওয়া হয়েছে। আমি বলব যারা ইংরেজি পড়ে বুঝতে পারেন তারা সবাই এই বইটা পড়ুন।

(৪) ইসলামে মোবাইল ফোন ব্যবহার: বৈধতার সীমা কতটুকু?

একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমাদের জানা উচিত মোবাইল ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের অবস্থান কি। এজন্য আমি আপনাদের একটা বই রিকমেন্ড করব।

বইঃ মোবাইল ফোন ব্যবহার: বৈধতার সীমা কতটুকু?
লেখঃ মুহাম্মদ মুফীজুল ইসলাম

পিডিএফ ভার্সনের ডাউনলোড করতে চাইলেঃ
https://islamhouse.com/bn/books/308399/

হার্ড কপি কিনতে চাইলেঃ
https://www.rokomari.com/book/124272/-series-no--33-mobile-phone-babohar-boidhotar-sima-kototuku-

গুরুত্বপূর্ণঃ

মোবাইল ফোন ব্যবহার এর শরীয় নীতি মালা নিয়ে সায়েখ আহমাদুল্লাহ এর একটা ১ ঘন্টা ১০ মিনিটের একটা লেকচার আছে। অবশ্যই নিচের লিঙ্ক থেকে লেকচার টা শুনুন। 
⬇️
https://youtu.be/JpW9dsyS-mk

আমি চেষ্টা করেছি পোস্টটা যথা সম্ভব ছোট রাখতে। তারপরও পোস্টটা অনেক বড় হয়ে গেছে। যারা ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পোস্টটা পড়েছেন তাদের জাজাকাল্লাহ খইরান। আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন আপনার জন্য এই আসক্তি দূরীকরণ কে সহজ করে দেন।

"আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ এর অন্য পর্ব গুলোর লিংক কমেন্টে সেকশনে দিয়ে দিচ্ছি" 

এরকম আরো ইসলামিক রিসোর্স পেতে জয়েন হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে। 
⬇️⬇️⬇️
www.facebook.com/groups/963422407394224

পোস্টটি কপি/শেয়ার করে সাদাকায়ে জারিয়া চালু রাখুন। জাযাকাল্লাহু খইরন।

পোস্টটি কপি/শেয়ার করে দাওয়াতি কাজে শরীক হতে পারেন। কারণ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“প্রচার করো যদি একটি আয়াতও হয়” 
(সহিহ বুখারি)।

আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ ২ (গানের আসক্তি দূরীকরণ)

আর, যাদের গান বা মিউজিক এর নেশা নেই। তারা এই পোস্টটি সম্পূর্ন ইগনোর করতে পারেন।

গান শোনা ছাড়ার জন্য নিজের ইচ্ছা শক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ন । আমি আমার নিয়তের উপর কতটা খালেছ, সেটা বেশি জরুরি। আর সাথে দরকার আল্লাহ সুবহানু তায়লার সাহায্য । এই জন্য আমাদের আল্লাহ সুবহানু তায়লার কাছে বেশী বেশী দু'আ করত হবে। 

যারা গান শোনা বন্ধ করতে পেরেছেন তাদের সবার মধ্যে যে বিষয়টা কমন ছিল তা হল। তারা সর্বপ্রথম তাদের ফোন,পিসি ,মেমরি আশে পাশে যত ডিভাইস আছে তার সব গান ডিলিট করেছেন। সেহেতু আপনিও এখনি আপনার ডিভাইস এর সকল গান ডিলিট করে দিন। (এখন বলতে এই পোস্ট পড়া অবস্থাতেই) 

এখন তো সব মিউজিক ডিলিট করে দিলেন। এখন মনকে কিভাবে শান্ত করবেন যখন আবার গান শুনতে ইচ্ছে হবে? 

এর ৩ টা সমাধান আছে। 

১. কোরআন তিলাওয়াত শোনা
২. ইসলামিক লেকচার/অডিও বুক
৩. নাসিদ (গজল)  

নিচে এই ৩ টার রিসোর্স দিয়ে দিচ্ছি। কষ্ট করে আর খুজতে হবে না। 

(১) কোরআন তিলাওয়াত এর রিসোর্সঃ

বিভিন্ন কারিদের ইউটিউব চ্যানেল পাবেন এই লিংকেঃ
⬇️
https://www.facebook.com/1753595351521780/posts/2943137375900899/

কুরআন তিলওয়াত এর সাথে বাংলা সাবটাইটেল সহ ইউটিউব চ্যানেলঃ

1. মুসলিম অনুবাদক

https://www.youtube.com/channel/UCFMt0ASZ6Fe7od1VCJkYByQ

2. Daily Ayah

https://www.youtube.com/channel/UC-qlmIbd-ZnFU-77f2PHb9A

3. Saakinah Media

https://www.youtube.com/channel/UCcCupV074HHUYGK5ftEClig

4. An Nafee 

https://youtube.com/c/AnNafee

5. Almarifa Media 

https://youtube.com/c/AlmarifaMedia

6. Al Mubeen

https://youtube.com/c/AlMubeenMedia10

কোরআন তিলাওয়াত এর আরো কিছু রিসোর্স পাবেন নিচের লিংকেঃ 
https://m.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1288820844854377/

(২) ইসলামিক লেকচার/অডিও বুকঃ

ইসলামিক অডিও লেকচার সিরিজ এর মেগা কালেকশনঃ
⬇️
https://m.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1258588077877654/ 

ইসলামিক অডিও বুক কালেকশনঃ
(পোস্ট করার পর লিংক আপডেট করা হবে) 

(৩) নাসিদ/গজলঃ

1. No Music Media 

(এদের ভিডিও গুলোতে, বিভিন্ন ভাষার পপুলার নাসিদ গুলোকে মিউজিক মুক্ত করে ইংরেজি সাবটাইটেল যুক্ত করে দেয়) 
https://youtube.com/c/NoMusicMedia

2. Abu Ubayda 

(আমার পছন্দের বাংলা নাসিদ আর্টিস্ট)
https://youtube.com/c/AbuUbaydaa

3. Nadeem Mohammed 

(আমার পছন্দের ইংরেজি নাসিদ আর্টিস্ট) 
https://youtube.com/c/nadeemmofficial

4. Holy Tune 

(বাংলা নাসিদ এর জন্য সবচেয়ে বড় ইউটিউব চ্যানেল)
https://youtube.com/c/HolyTunebdofficial

5. Nasheed Bangla Subtitle 
⬇️
(বিভিন্ন আরবী নাসিদ গুলোকে বাংলা সাবটাইটেল সহ আপলোড করে) 
https://youtube.com/c/NasheedBanglaSubtitle

6. Merciful Servant 
⬇️
(ইংরেজি সাবটাইটেল সহ)
https://youtube.com/playlist?list=PLyfPcUoivAtZxH4OldLYK3wYZLhFCyAS6

এগুলো ছাড়াও আপনার জানা মিউজিক মুক্ত কোনো চ্যানেল বা প্লেলিস্ট থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন। আমি এড করে দিব ইনশাল্লাহ ।

উপরের ৩টা ক্যাটাগরির মধ্যে কোনটা উত্তম তাতো আমরা সবাই জানি। 

এখানে নাসিদ শুনলে আপনি আপনার মনে শান্ত করতে পারবেন ঠিক। কিন্তু এতে আপনার কোনো সওয়াব হাসিল হবে না। যেখানে কোরআন তিলাওয়াত শোনার ফলে আপনি আপনার মনকে শান্ত করার পাশাপাশি প্রতি হরফে নেকি অর্জন করতে পারেন। 

এখন নাসিদ শুনার সীমা কতটুকু বা নাসিদ শুনা কতটা যুক্তিযুক্ত জানতে সায়েখ আহমাদ মুসা জিবরিল এর "মিউজিক শয়তানের সুর" এই বইটি পড়তে পারেন। মাত্র ৩০ টাকার ছোট বইটি যেকোনাে অনলাইন শপে বা "বইটই" এপে পেয়ে যাবেন। 
⬇️
https://link.boitoi.com.bd/7XPd 

এখন অনেকই বলবেন তাহলে কেন এই নাসিদ এর চ্যানেল গুলো শেয়ার করলেন? 

আসলে গান ও মিউজিকের নেশাটা অনেক শক্তিশালী। একসময় আমিও এই অন্ধকারে ডুবে ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন। প্রথম দিকে এই নাসিদ গুলোই আমাকে সাহায্য করেছে। এই কারণেই মুলত এগুলো শেয়ার করলাম।  

আর কোনো প্রকৃত মুসলিম নাসিদ শুনে নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলো নষ্ট করতে পারে না। যেখানে আমরা ঔ সময় গুলো কোরআন তিলাওয়াত শুনে অনেক সওয়াবের মালিক হতে পারি।

তাই আমি বলব যথা সম্ভব চেষ্টা করবেন নাসিদ থেকে দূরে থাকতে & বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত ও লেকচার সিরিজ শুনতে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন ।

"আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ এর অন্য পর্ব গুলোর লিংক কমেন্টে সেকশনে দিয়ে দিচ্ছি" 

এরকম আরো ইসলামিক রিসোর্স পেতে জয়েন হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে। 
⬇️⬇️⬇️
www.facebook.com/groups/963422407394224

পোস্টটি কপি/শেয়ার করে সাদাকায়ে জারিয়া চালু রাখুন। জাযাকাল্লাহু খইরন।

পোস্টটি কপি/শেয়ার করে দাওয়াতি কাজে শরীক হতে পারেন। কারণ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“প্রচার করো যদি একটি আয়াতও হয়” 
(সহিহ বুখারি)।

আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ ১ (গেমস এর আসক্তি দূরীকরণ)


 বর্তমানে যে বিষয়টা নিয়ে বেশি কথা হচ্ছে সেটা নিয়ে প্রথমেই একটু কথা বলে নেই। অনলাইনে দেখা যাচ্ছে অনেকেই Free fire & Pubg এর ব্যান হওয়ার কারণে খুশি হচ্ছে। যেমন খুশি হয়েছিল দেশে পর্ণ সাইট গুলো বন্ধ হওয়ার পর। কিন্তু ফলাফল কি হয়েছে আমরা জানি। 


এছাড়া ভারতেও ব্যান করা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফল "vpn"। যদিও অনেকে বলতেছে vpn ব্যবহার করেও খেলতে পারবেনা এমন ব্যবস্থা করবে সরকার ! এটা হাস্যকর। যদি এটা সম্ভবই হয় তবে পর্ণ সাইট গুলোর ক্ষেত্রে এ প্রযুক্তি কেন ব্যবহার করা হচ্ছে না? 


আর যদি ধরেও নেই ভিপিএন ব্যবহার করে এই গেমস গুলো বন্ধ করলো। কিন্তু এগুলো ছাড়া আর কোনো গেমস নেই। এগুলো বন্ধ হলে আসক্তরা COD, COC এর মত গেমস গুলো খেলা শুরু করবে। আর পিসি গেমারদে কথাতো বাদই দিলাম। তাই এটা কোনো স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। এই কারণে আমাদের অন্যভাবে চিন্তা করতে হবে। 


যেমন, আমাদের এই আন্দোলনটাকে প্রকৃত অর্থে সফল করতে পারব তখন। যখন আমরা দেশের প্রত্যেকটা গেমে আসক্ত ভাই & বোনকে গেমস এর ক্ষতিকর প্রভাব গুলো বুঝাতে সক্ষম হবো। যখন তারা নিজে থেকেই এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে প্রকৃতপক্ষে অনুধাবন করতে পারবে। তখন নিজ থেকেই এ গুলো খেলা বন্ধ করে দিবে। 


তো এখন প্রশ্ন হল, এটা কিভাবে সম্ভব হবে? আমি চেষ্টা করব এই পোস্টে এই সমস্যার সমাধান & কার কি দায়িত্ব ও কর্তব্য তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার। 


এজন্যে পোস্টটাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করব। 


১. গেমস আসক্তি সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞান কি বলে? 

২. আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে আসক্ত ব্যক্তির পদক্ষেপ সমূহ। 

৩. আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে বাবা-মা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পদক্ষেপ সমূহ। 

৪. অসক্ত ব্যক্তিকে না জানিয়ে কিভাবে তার ফোন & গেমস এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়? 


১. গেমস আসক্তি সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানঃ


WHO (World Health Organization) ও (APA) American Psychiatric Association এর মতে ভিডিও গেইমে আসক্তি একটি মানসিক রোগ। এটাকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমনঃ Gaming disorder, internet gaming disorder, problematic online gaming. 


এর লক্ষণ গুলো হলঃ 

Problem gambling (জুয়া বা এর পেছনে অর্থ ব্যয়), হতাশা, social withdrawal (একাকীত্ব পছন্দ করা/মানুষের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেওয়া) , দীর্ঘ সময় ধরে গেমস খেলা। 


এর ফলে যে সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারেঃ 

মেজাজ খিটখিটে, হতাশা, ঘুমে সমস্যা, মোটা হয়ে যাওয়া, Anxiety disorder (ভয় পাওয়া) ইত্যাদি। 


বিস্তারিত জানতেঃ

⬇️ https://en.m.wikipedia.org/wiki/Video_game_addiction


২. আসক্ত ব্যক্তির পদক্ষেপ সমূহঃ 


উপরে বর্ণিত গেমস সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞান অবস্থান জানার পর যদি আসক্ত ব্যক্তি বুঝতে পারে। গেমস এর কারণে আসলেই তার স্বাস্থ্যের (বিশেষ করে চোখের) & পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে এবং সে নিজেও চায় গেমসের নেশা থেকে বের হতে। কিন্তু হতে পারছে না। সে ক্ষেত্রে তার বাবা-মা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকদের বন্ধু রূপে পাশে থাকতে হবে।


এক্ষেত্রে সম্ভব হলে এখনই ফোন থেকে সকল গেমস আনইনস্টল করে দিতে হবে। আর যদি তা সম্ভব না হয়। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট টার্গেট সেট করে ধীরে ধীরে এই আসক্তি বন্ধ করতে হবে। 


যেমনঃ আজ ৩ ঘন্টা, কাল ২ ঘন্টা । এভাবে আস্তে আস্তে তা কমিয়ে আনতে হবে। এভাবে আস্তে আস্তে যখন গেমস খেলার পেছনে সময় কম দিবে ফলে নেশা কমে যাবে। তখন ইনশাআল্লাহ গেমস এর নেশাও বন্ধ হয়ে যাবে। 


এজন্যে নিজেকে অন্য কোনো প্রোডাক্টিভ কাজে সময় দিতে হবে। যেমনঃ ভিডিও গেমস এর সময়টা খেলাধুলা, শরীর চর্চা সহ বই পড়ার মতো কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। 


এখন যদি গেমসে আসক্ত ব্যক্তি বই পড়তে পছন্দ করেন তাহলে "ইলেকট্রনিক গেমস এবং কমার্সিয়াল সেন্টারের মহামারি" বইটি পড়তে দিতে পারেন। আর বইটি যেকোনো অনলাইন বুক স্টোরে পেয়ে যাবেন।


যদি কিনতে না পারেন তাহলে নিচের লিঙ্ক থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করে নেবেন। 

⬇️⬇️⬇️

https://i-onlinemedia.net/downloads/books/general/Electronic_games_and_commercial_centre.pdf 


ইউটিউব থেকে এ বই এর অডিও বুকও শুনতে পারেন

⬇️⬇️⬇️

https://m.youtube.com/playlist?list=PL6AAfPzsBJ6v8F_npUlV9D6FWoW6qgXk7


৩. বাবা-মা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পদক্ষেপঃ


যে গেমসের নেশায় আসক্ত, বাবা-মা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রথমেই তাদের ভালো করে গেমস এর ক্ষতিকারক দিকগুলো জানাতে হবে। যেমনঃ এর কারণে তার পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। তার স্বাস্থ্য (চোখ) এর ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া এর দ্বারা প্রকৃতপক্ষে কোন লাভ হচ্ছে না। মূলত যেভাবে একজন আসক্ত ব্যক্তিকে এর ক্ষতিকারক দিকগুলো অনুধাবন করানো যায় আরকি। 


কারণ জোর জবরদস্তি করে হয়তো বা কিছুদিনের জন্য গেমস থেকে দূরে রাখা যাবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী কোন ফলাফল আসবে না। তাই সর্বপ্রথম গেমসের নেশায় আসক্ত ব্যক্তি কে বিষয়টা বুঝাতে হবে।


এখন উপরের পরামর্শে যদি কাজ না হয় সে ক্ষেত্রে নিচের স্টেপগুলো ফলো করুনঃ


১. আসক্ত ব্যক্তকে ফোন না দেয়াঃ 

এটা সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন এর কারনে আবার কোনো পাগলামি না করে। এখানে অনেক বাবা-মা ভুল করে। তাই এদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। যেন হিতে বিপরীত না হয়ে যায়। 


সে ক্ষেত্রে আস্তে আস্তে নেশা দূর করতে হবে। যেমনঃ আজ ২/৩ ঘন্টার জন্য মোবাইল দিব এর বেশি না। আস্তে আস্তে তা কমিয়ে আনতে হবে।


২. ফোন লক করে রাখাঃ 

এতে বাবা-মা ই শুধু পাসওয়ার্ড জানবেন। ফলে যখন গেমস খেলার প্রয়োজন হবে বা বাবা-মা অনুমতি দিবে। তখন ওনাদে কাছ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফোন আনলক করে নিবে। 


৩. গেমস আনইনস্টল করে দেওয়াঃ 

প্রয়োজনে গেমস আনইনস্টল করে দিবেন। কারন অনেক সময় দেখা যায় একসাথে অনেক গেমস ফোনে থাকার কারনে অযথাই খেলা হয়। একটা খেলে বোর হয়ে গেলে অন্যটা খেলে। এতে প্রচুর সময় অপচয় হয়। সেক্ষেত্রে বাবা-মাকে অতিরিক্ত গেমস গুলো আনইনস্টল করে দিতে হবে। 


উপরের পদক্ষেপ গুলো হলো আসক্ত ব্যক্তির নিজস্ব ফোন না হলে সে ক্ষেত্রে। 


৪. অসক্ত ব্যক্তিকে না জানিয়ে তার ফোন & গেমস এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণঃ


এখন, যদি আসক্ত ব্যক্তি নিজের ফোন ব্যবহার করে তাহলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। 


এক্ষেত্রে বিষয়টা একটু কঠিন। তবে অবশ্যই আগে গেমস এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে বুঝাতে হবে। বুঝতে পারলে ভালো। আর বুঝতে না পারলে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।


এক্ষেত্রে আমরা গুগল এর একটা এপস ব্যবহার করব "Google Family Link"। এর মাধ্যমে আপনি গেমস এ আসক্ত ব্যক্তির ফোন কন্ট্রোল করতে পারবেন। 


যেমনঃ লোকেশন জানতে পারবেন, গুগল এক্টিভিটি দেখতে পারবেন, কখন কখন ফোন ব্যবহার করবে তার সিডিউল করে দিতে পারবেন, আপনার ফোন থেকে ঐ ফোন লক করতে পারবেন & এমনকি যেকোনো এপস এর ব্যবহার চাইলে বন্ধ করে দিতে পারবেন।


এপটা গেমসে আসক্ত ব্যক্তির ফোনের সাথে লিংক করতে হলে অবশ্যই ওর ফোনটা কিছু সময়ের জন্য আপনার কাছে আনতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে লিংক করা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে কোনো কিছুই করার নেই।


এখন কিভাবে কি করতে হবে তা নিয়ে ইউটিউবে একটা ভিডিও পেয়েছি। 


ভিডিও লিংকঃ

⬇️⬇️⬇️

https://youtu.be/FX8Chp6jHHM


শেষ কথা হল, কোনো প্রকৃত মুসলিম কখনোই নিজের জীবনের মূল্যবান সময়। এইসব মূল্যহীন গেমস খেলে নষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ তুমি আমাদের সাহায্য করো এবং ভিডিও গেমস এ আসক্ত ভাইদের জন্য কাজটা সহজ করে দাও। 


আশা করি এটার মাধ্যমে সবাই সবকিছু বুঝে যাবেন। তারপরও কারো কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে আমাকে জানাতে পারেন । আমি সাহায্য করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।


এরকম আরো ইসলামিক রিসোর্স পেতে জয়েন হতে পারেন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে। 

⬇️⬇️⬇️

www.facebook.com/groups/963422407394224


পোস্টটি কপি/শেয়ার করে সাদাকায়ে জারিয়া চালু রাখুন। জাযাকাল্লাহু খইরন।


পোস্টটি কপি/শেয়ার করে দাওয়াতি কাজে শরীক হতে পারেন। কারণ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,


“প্রচার করো যদি একটি আয়াতও হয়” 

(সহিহ বুখারি)।