আসক্তি দূরীকরণ সিরিজ ৫ (সোশ্যাল মিডিয়া & ইন্টারনেট আসক্তি দূরীকরণ)


প্রথমেই বলে নেই, আপনি বুঝবেন কিভাবে আপনি সোসাল মিডিয়ায় আসক্ত! 

আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত কি-না তা জানতে নিজেকে নীচের এই ৬টি সহজ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুনঃ

১. আপনি কি সোশ্যাল মিডিয়ায় অধিক সময় ব্যয় করেন, যখন অফলাইনে থাকেন, তখনও কি এ বিষয়ে ভাবেন?

২. আপনি সোশ্যাল মিডিয়া আরো বেশি ব্যবহার করার জন্য অনুশোচনা বোধ করেন?

৩. আপনি কি ব্যক্তিগত সমস্যা ভুলতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন?

৪. আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার কমাতে চাচ্ছেন, কিন্তু পারছেন না?

৫. সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে না পেরে আপনি কি অসস্তিবোধ করেন?

৬. সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার আপনার চাকরি, পারিবারিক সম্পর্ক বা পড়াশুনার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে?

আপনি যদি এই প্রশ্নের কয়েকটির বিপরীতে ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তর দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি সোসাল মিডিয়া & ইন্টারনেটে আসক্ত একজন। 

এখন আসি কিভাবে আপনি এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসবেন। 

আমি পোস্টটি ২ ভাগে বিভক্ত করেছি। আমি প্রথম ভাগে সোসাল মিডিয়ার খারাপ দিক গুলো উল্লেখ করব। এবং ২য় ভাগে কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেট ব্যবহার কন্ট্রোলে রাখবেন তা সম্পর্কে কিছু টিপস শেয়ার করব।

সোশাল মিডিয়া ও ইন্টারনেট এর খারাপ দিকঃ

1. বিষণ্নতা এবং উদ্বেগঃ

আপনি কি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ব্রাউজিং প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা ব্যয় করেন? সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে খুব বেশি সময় ব্যয় করা আপনার মেজাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারকারীরা উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার লক্ষণ সহ দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের রিপোর্ট করার সম্ভাবনা বেশি।

কারণ সোশ্যাল মিডিয়া আপনাকে অন্য সবার জীবনের নির্বাচিত সেরা অংশগুলি দেখতে দেয়, যা আপনি আপনার নিজের জীবনের নেতিবাচকগুলির সাথে তুলনা করেন৷ অন্য লোকেদের সাথে নিজেকে তুলনা করা উদ্বেগের একটি নিশ্চিত পথ, এবং সোশ্যাল মিডিয়া এটিকে সহজ করে তুলেছে।

2. FOMO (Fear of Missing Out)

কোনো কিছু হারিয়ে যাওয়ার ভয় (FOMO) এমন একটি ঘটনা যা সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সাথেই জন্মেছিল। আশ্চর্যজনকভাবে, এটি সামাজিক মিডিয়ার সবচেয়ে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবগুলির মধ্যে একটি।

এর কারণে আপনি সবসময় একটা ভয়ে থাকেন যে, না জানি আপনার কি হয়ে গেল বা কি হারিয়ে গেল। উদাহরণস্বরূপ, আপনার পোস্ট করা ছবিতে কে লাইক করল আর কে কমেন্ট করল তা দেখার জন্য আপনি ক্রমাগত আপনার নোটিফিকেশন গুলো দেখতে থাকেন। অথবা আপনার বন্ধু ও পছন্দের সেলিব্রিটিদের কোনো পোস্ট আপনার মিছ হয়ে গেল কি না তা নিশ্চিত করতে সারাদিন আপনার ফেসবুক ফিডে ঘুরতে থাকেন। 

3. অবাস্তব প্রত্যাশাঃ

বেশিরভাগ লোকেরা সম্ভবত এখনই জানেন, সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের মনে জীবন এবং বন্ধুত্বের অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি করে।

বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের অনলাইন সত্যতার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। লোকেরা শুধু তাদের ভালো দিক গুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে, Facebook ও Instagram এ বিভিন্ন ফিল্টার ব্যবহার করে ছবিকে আরো সুন্দর করে শেয়ার করে। 

কিন্তু বাস্তবে, এই সব প্রহসন কিনা তা আপনার জানার উপায় নেই।

এই জগাখিচুড়ি থেকে বেরিয়ে আসার একটি সহজ উপায় হল প্রত্যেকের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা বলা বন্ধ করা।

4. নিজের শরীর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাঃ

ইনস্টাগ্রামে আপনি যদি জনপ্রিয় ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টগুলি দেখেন, আপনি অবিশ্বাস্যভাবে সুন্দর লোকেদের তাদের নিখুঁত আকারের শরীরে, দামি পোশাক পরা দেখতে পাবেন। আর এগুলো দেখে দেখে আপনার নিজেকেই নিজের পছন্দ হবে না। আর এই নিয়ে আপনি সব সময় এক অশান্তির মধ্যে থাকবেন। 

আজ, শরীরের ইমেজ প্রত্যেকের জন্য একটি সমস্যা। এটা মনে রাখা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ যে সবাই মানুষ। কেউ রাতারাতি সুপারমডেলের মতো হয়ে যায় না। 

এ থেকে বাঁচতে নিজেকে এমন লোকেদের সাথে ঘিরে রাখুন যারা আপনাকে ভালোবাসে, আপনার ইনস্টাগ্রাম সৌন্দর্যকে নয়। 

5. অস্বাস্থ্যকর ঘুমঃ

এর সাথে তো মোটামুটি সবাই পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়াতে অত্যধিক সময় ব্যয় করা খারাপ ঘুমের কারণ হতে পারে। অসংখ্য গবেষণায় দেখা গেছে যে সোশ্যাল মিডিয়ার বর্ধিত ব্যবহার আপনার ঘুমের মানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ঘুমের ধরণ অনিয়মিত হয়ে গেছে এবং দিনের অনান্য কাজে প্রোডাক্টিভিটি হ্রাস পেয়েছে, তাহলে আপনি সামাজিক মিডিয়া ব্রাউজ করার সময় কমানোর চেষ্টা করুন।

রাতে বিছানায় আপনার ফোন ব্যবহার করার কারণে এটা বেশি হয়। তাই বিছানায় ঘুমানোর জন্য যাওয়ার সময় ফোন নিবেন না। সোশ্যাল মিডিয়া গুলোকে আপনার মূল্যবান ঘুম কেড়ে নিতে দেবেন না।

6. সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি অত্যধিক আসক্তিঃ
 
সোশ্যাল মিডিয়া সিগারেট এবং অ্যালকোহলের চেয়ে বেশি আসক্তি হতে পারে। এই একটি আসক্তি আপনাকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। 

অত্যধিক সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তির কারণে আপনি মানুষিক রোগেও আক্রান্ত হতে পারেন। যাকে Problematic social media use বলে। বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে দেখতে পারেনঃ 
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Problematic_social_media_use

সোশাল মিডিয়ার আসক্তি থেকে বাঁচার উপায়ঃ

(সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি ও মোবাইল ফোন আসক্তি, একটি আরেকটির সাথে সরাসরি জড়িত। তাই "মোবাইল ফোনের আসক্তি দূরীকরণ" অংশটুকু সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে)

মোবাইল ফোনের আসক্তি দূরীকরণঃ
https://www.facebook.com/groups/963422407394224/permalink/1358443781225416/ 

১. অ্যাপব্লকার:

ইওর আওয়ারঃ

এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্য অ্যাপব্লক করে রাখা যায়। বিশেষ কাজের সময় চাইলে নির্দিষ্ট কয়েকটি অ্যাপ চিহ্নিত করেন সেগুলোকে ব্লক করে রাখা যাবে। এ সুবিধায় ব্যবহারকারী ব্লক করা অ্যাপগুলোর নোটিফিকেশনগুলো অ্যাপ আনব্লক করার পরে দেখতে পাবেন।

এতে রয়েছে পাসওয়ার্ড ব্যবহারের সুবিধা। ফলে অন্য কেউ চাইলে সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবে না। এটির মাধ্যমে প্রতিদিন টাইম লিমিট করে দিতে পারেন।

অ্যাপটি ব্যবহারকারীর ফোন ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী বলে দেবে আসক্তির লেভেল সম্পর্কে। তারপর আসক্তি কাটিয়ে উঠতেও সহায়তা করবে এটি। ব্যবহারকারীরা এটির মাধ্যমে প্রতিদিন কতটুকু সময় ফোনে কাটাবেন সেই লক্ষ্য নির্ধারণ করে আসক্তি কমাতে পারবেন।

অ্যাপটির সাহায্যে কত সময় ফোনের স্ক্রিন অন ছিল, কোন সময় কোন অ্যাপ ব্যবহার করেছেন ইত্যাদি তথ্য টাইমলাইন আকারে পাওয়া যাবে।

App link: YourHour = https://play.google.com/store/apps/details?id=com.mindefy.phoneaddiction.mobilepe 

স্টে ফোকাসঃ

স্মার্টফোনে আসক্তির অন্যতম কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি দুর্বলতা। যারা একটু পরপর ফেসবুক বা টুইটারে ঢু মারেন। এ অ্যাপটি তাদের আসক্তি কমাতে সহায়তা করতে পারবে।

এই এপসটাও ইওর আওয়ার এর মতো। এর মাধ্যমে প্রতিদিন কতবার ফেসবুক অ্যাপ চালু করেন বা কত সময় চালাচ্ছেন এমন হিসাব জানতে পারবেন; তা থেকে কতটা সময় নষ্ট হচ্ছে তা জেনে নিতে পারবেন।

এর মাধ্যমে আপনি ফোনে থাকা কোন অ্যাপ কতবার চালু করবেন তা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। পরে অ্যাপটি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে আপনি নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে বেশি অ্যাপটি ব্যবহার করতে চাইছেন।

 App link: Stay Focused = https://play.google.com/store/apps/details?id=com.stayfocused
 
এখন প্রশ্ন হচ্ছে , যে জিনিসের প্রতি আসক্তি থাকে সেটির মাধ্যমেই আসক্তি কাটিয়ে ওঠা কতটা সম্ভব?

এখানে বিষয়টা লোহা দিয়ে লোহা কাটার মতো।  

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যে কোনো ধরনের আসক্তি কমানোর পদ্ধতি ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হয়। উদাহরণ স্বরূপ অনেকে একদিনে ধূমপানের মতো আসক্তিও ছেড়ে দিতে পারে, আবার অনেকে ছাড়েন ধীরে ধীরে। ফলে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ সবার মোবাইল আসক্তির জন্য কার্যকর হবে, এমনটা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে চেষ্টা করে দেখতে সমস্যা কোথায়? 

আর আমাদের নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে এই আসক্তি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য। 

২. সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সময় নির্ধারণঃ

স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করুন। দিনে কতবার স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন তা ঠিক করে নিন। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন দিনে ২০ মিনিটের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া দেখবেন না। এ ছাড়া খাওয়া ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন না। 

এক্ষেত্রে উপরের ২টা এপস উপকারে আসবে। এই এপস গুলো এই নির্দিষ্ট সময় শেষে নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে আপনাকে সংকেত দিয়ে দিবে যে আপনি 20 মিনিট ফেসবুক ব্যবহার করে ফেলেছেন। 

৩. স্মার্টফোন নিয়ে বিছানায় নয়ঃ

ঘুমানোর আগে ফোন বন্ধ করে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। ঘুমানোর সময় ফোন বন্ধ করলে তেমন কোনো ক্ষতি নেই ভেবে ফোন বন্ধ করে দিন। ঘুম কম হওয়া বা অনিদ্রার অন্যতম একটি কারণ স্মার্টফোন আসক্তি। অনেকে সকালে ঘুম থেকে ওঠার জন্য স্মার্টফোনে অ্যালার্ম সেট করেন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ব্যবহারকারীরা ঘুম থেকে উঠে অ্যালার্ম বন্ধ করে ফোনের নোটিফিকেশন চেক করা শুরু করে দেন। এতে অনেক সময় কেটে যায়। এমন সমস্যা এড়াতে স্মার্টফোনে অ্যালার্মের বদলে অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধঃ

আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সরিয়ে ফেলুন। স্মার্টফোনে ফেসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপগুলো দরকারি হলেও আসক্তি কমাতে চাইলে এসব অ্যাপ সরিয়ে ফেলতে হবে। যেকোনো একটা যোগাযোগ মাধ্যমের এপ ব্যবহার করুন। এতে সময় অপচয় কম হবে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোম্পানি গুলো তাদের এপগুলোকে আপনাকে আসক্ত করার জন্য ডিজাইন করে। কারন আপনি যত বেশিক্ষণ তাদের এপ ব্যবহার করবেন তত বেশি তারা এড সো করতে পারবে। এবং তাদের আয়ও বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে এপ আনইনস্টল করে প্রয়োজনে ওয়েবসাইট ব্যবহার করূন। কারন এটা আপনার সোসাল মিডিয়ার প্রতি আকর্ষণ কমিয়ে আনবে।

(এইটা খুবই কার্যকরী একটা পদ্ধতি। ব্যক্তিগত ভাবে এটা আমার আসক্তি কমিয়ে আনতে সহযোগিতা করেছে)

৫. বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনঃ

সোশ্যাল মিডিয়ায় নষ্ট করা সময়টা আপনার পছন্দের বিষয়ের বই পড়ে কাটাতে পারেন। 

৬. শারীরিক ব্যায়াম ও খেলাধুলা করূনঃ

সোশ্যাল মিডিয়ার সময় থেকে নিজের স্বাস্থ্যের জন্য কিছু সময় বরাদ্দ নিয়ে নিন। নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা মাঝে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। 

৭. মেডিটেশনঃ

আমি আগেও বলেছিলাম নামাজ ও আল্লাহর স্মরণ থেকে বড় মেডিটেশন আর কিছু নেই। তাই নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করার চেষ্টা করুন। আল্লাহর কাছে সাহায্য পার্থনা করতে থাকুন। 

৮. মৃত্যুকে স্মরণ করুনঃ

অনেকে অবাক হয়ে যেতে পারেন। এখানে আবার মৃত্যুর কথা আসল কোথা থেকে! আসলে মৃত্যু আপনাকে এই পৃথিবীতে আসার কারণ মনে করিয়ে দেয় , আপনার জীবনের মূল্য & পৃথিবীতে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য গুলো কে মনে করিয়ে দেয় । 

এতে করে আপনি আপনার লাইফ নিয়ে আরো সিরিয়াস হবেন। এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অযথা সময় নষ্ট না করে নিজের জন্য ও সমাজের জন্য ভালো কিছু করবেন। 

বেশি কিছুর দরকার নেই। জীবনে ‘প্রত্যাশা’র পরিমাণটা কমিয়ে দিন। অল্পে তুষ্ট থাকুন। মনটা ফুরফুরে থাকবে। সোশ্যাল মিডিয়ার ডিপ্রেশন থেকে অনেকাংশে বেঁচে যাবেন, ইনশাআল্লাহ্।

একবার শুধু মন দিয়ে ভাবুন—আমাদের বেঁচে থাকার কী গ্যারান্টি আছে? হঠাৎ করেই তো জীবনের রঙ বদলে যায়; গন্তব্য ভিন্ন হয়ে যায়। কেন তাহলে আমরা জীবন নিয়ে এত এত স্বপ্ন দেখি? অথচ মুহূর্তের মধ্যেই মৃত্যু আমাদের সকল স্বপ্নকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়!

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি কথা মনকে রিফ্রেশ করে। তিনি বলেছেন, এমন কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই, যা মৃত্যুর স্মরণ দ্বারা দূর করা যায় না।

অর্থাৎ, আপনি যত দুঃখ-কষ্ট বা বিপদ-আপদেই থাকুন না কেনো, যখন মনের গভীর থেকে উপলব্ধির সাথে মৃত্যুর বাস্তবতা নিয়ে চিন্তা করবেন, তখন আর কোনো দুঃখ-কষ্টেই আপনি ভেঙে পড়বেন না। কারণ, মৃত্যুর চেয়ে বড় বিপদ আর নেই। অথচ, সেটি যেকোনো মুহূর্তেই আসতে পারে।

আমি আপনাদের বলছি না, মৃত্যুর ভয়ে জীবনটাকে শুকনো করে ফেলুন। তবে, জীবনের দুঃখ-কষ্টের অনুভূতিকে হালকা করতে এবং আখিরাতমুখী জীবনের মোটিভেশন পেতে মৃত্যুকে স্মরণ করতেই হবে। মৃত্যুর স্মরণের মাধ্যমে আমরা গুনাহ থেকে বাঁচতে পারবো এবং আল্লাহর সাক্ষাতের জন্য উদগ্রীব হতে পারবো। ইনশাআল্লাহ্। 

আল্লাহ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন